
আহমেদ হোসাইন ছানু:-
পিতা: সুখরঞ্জন বিশ্বাস
মাতা: পুষ্প রানী বিশ্বাস
চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস ১৯৮০ সালের ৫ই মার্চ ঝালকাঠি জেলার খাজুরা গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট।
লেখালেখির সূচনা: ১৯৯৫ সালে।
শিল্পী হওয়ার উদ্দেশ্যে ১৯৯৯ সালে খুলনায় আসার সিদ্ধান্ত নেন। তবে পরিবারের সবার সমর্থন না পাওয়ায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। একদিন বাবা ও বড় ভাই বাড়িতে না থাকার সুযোগে মায়ের পায়ে হাত রেখে আশীর্বাদ নিয়ে তিনি খুলনায় পাড়ি জমান।তিনি ছবির ভেতর লুকানো কথাগুলো প্রকাশ করতে ভালোবাসেন। তার প্রিয় কিছু মানুষের অনুপ্রেরণায় ছবি আঁকার পাশাপাশি লেখালেখিও নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন।খুলনা আর্ট কলেজ থেকে ২০০৬ সালে পড়াশোনা শেষ করেন। একই বছর তিনি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের মন্টু বিশ্বাসের কন্যা শিলা বিশ্বাসকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। স্ত্রী শিলা বিশ্বাসের অনুপ্রেরণায় তার লেখালেখির জগতে আরও গভীর সম্পৃক্ততা তৈরি হয়। তাদের সংসারে দুই সন্তান ছেলে ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে এবং মেয়ে বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে।পিতার মৃত্যু তাকে মানসিকভাবে ভীষণভাবে আঘাত করে। বর্তমানে তিনি স্মৃতিশক্তিহীন মায়ের সঙ্গেই অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করেন এবং শিল্পচর্চায় নিজেকে ব্যস্ত রাখেন।নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন “হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য সংরক্ষণশালা”, যেখানে তার পিতা-মাতার ব্যবহৃত নানা জিনিসের সাথে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করে তিনি প্রশংসা অর্জন করেছেন।তার লেখা কবিতা ইতোমধ্যে জাতীয় দৈনিক, ম্যাগাজিন ও খুলনার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। “অশ্রু ঝরা জল” নামের কবিতা দুটি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তিনি লেখালেখিকে জীবনের অংশ করে নেন। ২০১৯ সালে তার লেখা “সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি” চারটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
বর্তমানে তিনি নিয়মিত লিখছেন
দৈনিক জন্মভূমি, ভয়েস অব টাইগার, দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন, দৈনিক তথ্য, সাপ্তাহিক আজকের জনকথা, আজকালের আলো, জনবানী এবং বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায়।তার একক কোনো গ্রন্থ প্রকাশিত না হলেও, যৌথভাবে কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে:
১. মরহুম লিয়াকত আলী স্মারক গ্রন্থে প্রকাশিত লেখা: “ঝরে গেল খুলনার উন্নয়নের চাবিকাঠি”
২. “নিদ্রিত নয়ন” (সম্পাদনা: অলক রায় ও কাজল রায়) এতে তার ১০টি কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।
৩. “খুলনার খণ্ড খণ্ড ইতিহাস ও রকমারি ভাবনা” (লেখক: নাসির আহমেদ) এতে তার ছবি ও লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
৪. “কচুরিপানা” (লেখক: হৃদয় সানা) বইটির প্রচ্ছদ অঙ্কন করেছেন তিনি।
এর বাইরে অসংখ্য বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছেন চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস।তিনি বিশ্বাস করেন, এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে এমন কিছু করে যেতে হবে যাতে মৃত্যুর পরেও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকা যায়।তার জীবনের অন্যতম অর্জন নিজের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান “খুলনা আর্ট একাডেমি”। ২০১০ সাল থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অধ্যয়নে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।তার তত্ত্বাবধানে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন চারুকলা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে এবং ১২ জন শিক্ষার্থী বিশ্বভারতীতে স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। বর্তমানে তার অনেক শিক্ষার্থী পিটিআই ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ক্যাডেট স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।তিনি বিভিন্ন সময়ে চারুকলা চর্চার জন্য একাধিক সম্মাননা স্মারক পেয়েছেন।২০১৯ সালে খুলনা মিউজিক ক্লাব এবং ২০২১ সালে কলকাতা পরিমল সাহিত্য পত্রিকা তাকে কবি হিসেবে সম্মাননা দেয়।২০২৫ সালের ৭ জুন যমুনা টিভি তার জীবনীভিত্তিক ডকুমেন্টারি সম্প্রচার করে। একই বছরের ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সিইউসি সংগঠনের পক্ষ থেকে বিনা অর্থে শিক্ষাদান করার জন্য তাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।তিনি খুলনার নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত। শিক্ষার্থীদের আনন্দ দিতে মাঝে মাঝে জাদুবিদ্যার প্রদর্শনীও করেন।চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস মূলত একজন নিবেদিতপ্রাণ শিল্পী। অবসর সময়ে লেখালেখি তার সাধনা। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় নিয়মিত তার লেখা প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি অন্যান্য কবিদের লেখা প্রকাশেও সহযোগিতা করেন।২০২০ সাল থেকে তিনি ‘কলম যোদ্ধা’ গ্রুপের এডমিন হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে নতুন লেখকদের লেখা প্রকাশে সাহায্য করে আসছেন।তার জন্মস্থান বরিশাল, ঝালকাঠি এবং কর্মস্থান খুলনা। তিনি বছরে এক-দুইবার গ্রামে যান এবং গ্রামের মানুষের খবরাখবর রাখেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “খাজুরা ঝালকাঠি” নামে একটি পেজ পরিচালনা করেন, যেখানে গ্রামের খবর ও মানুষের জীবনবৃত্তান্ত প্রকাশ করেন।তিনি বর্তমানে খুলনায় নিজ প্রতিষ্ঠিত খুলনা আর্ট একাডেমি পরিচালনা করছেন এবং তার প্রাক্তন ছাত্র মহানন্দ গাইন পরিচালিত একটি অনলাইন স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে তিনি ক্লাস নেন না।তার লেখা কবিতা সংখ্যা ৭৭৫টি, গান ৩৯৫টি, এবং অসহায় মানুষকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০টি জীবনীমূলক গল্প রচনা করেছেন।জীবনের সখ: অসহায় মানুষের বন্ধু হওয়া।
বর্তমান স্বপ্ন: বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় চারুকলা শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেওয়া এবং এই স্বপ্নে সফল হওয়ার চলমান রেখেছেন-১৬তম চারুকলা ভর্তি কোচিং ২০২৫ সালে চলমান আছে।
ঠিকানা:
জন্মস্থান: বরিশাল, ঝালকাঠি
বর্তমান ঠিকানা: খুলনা আর্ট একাডেমি, ৩৬ আয়েশা কটেজ, ওহাব এভিনিউ, ইকবালনগর, খুলনা।
জাতীয়তা: বাংলাদেশী
মোবাইল: 01716570062