1. admin@progotinews24.com : admin :
June 6, 2025, 9:38 pm
শিরোনামঃ
প্রধান উপদেষ্টার ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বার্তা কবিতাঃ কোরবানির শিক্ষা বিএমজেএ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল হাইকে মনোনীত করায় অভিনন্দন নতুনতারা পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক সাইফুর মিনা’র ঈদের শুভেচ্ছা জলকামানের মুখে অসহায় দীর্ঘশ্বাস সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা ও বলিষ্ঠ প্রতিরোধ সাংবাদিকদেরকে গড়ে তুলতে এক প্লাটফর্মে কাজের আহ্বান খুলনা জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির সমন্বয় কমিটি গঠন বিশ্বকাপ জিততে রোনালদো ২০৩৪ পর্যন্তও খেলবেন ঈদুল আজহায় সুড়ঙ্গ, তুফান সিনেমার রেকর্ড কেড়ে নিবে তাণ্ডব? ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি হয়নি, নির্বিঘ্নে যাচ্ছেন যাত্রীরা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্ট

মুসলিম জাহানের হৃদয়ের স্পন্দন ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও মর্যাদা

Reporter Name
  • Update Time : Thursday, June 5, 2025,

কলমেঃ সাইফুর মিনা 

 

মুসলিম জাহানের হৃদয়ের স্পন্দন ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব।দেখতে দেখতে ঈদুল আজহা চলে এলো। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। সাধারণত উট, গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। ছাগল, ভেড়া কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে, গরু-মহিষ দুই বছর পূর্ণ হতে হবে, উট পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। তদ্রূপ হাঁস-মুরগি বা কোনো পাখি দ্বারাও কুরবানী জায়েয নয়। জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পালিত হয় এ উৎসব। কোরবানি শব্দটির অর্থ ত্যাগ ও নৈকট্য। মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও মানবকল্যাণে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করাই মূলত ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের তাৎপর্য।

 

প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে হজরত ইব্রাহিম (আঃ) তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানি করার প্রস্তুতি নিয়ে অনন্য ত্যাগের আদর্শ স্থাপন করে গেছেন। আল্লাহর নির্দেশেই তিনি ইসমাইল (আঃ)-কে কোরবানি দিতে উদ্যত হয়েছিলেন মক্কার মরু প্রান্তরে। মহান আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর সংকল্পের দৃঢ়তা দেখে তাঁর কোরবানি কবুল করেন এবং হজরত ইসমাইল (আঃ)-এর স্থলে একটি দুম্বা কোরবানি মঞ্জুর করেন। এরই সূত্র ধরে গোটা মুসলিম জাহানে আজও চলে আসছে কোরবানির এই ধারা। এর ভেতর দিয়ে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিকে অগ্রসর হয় মুসলিম জাতি।কোরবানি মুসলিম উম্মাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যাঁদের ওপর জাকাত ওয়াজিব, তাঁদের ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। পশু কোরবানির মাধ্যমে গরিব-দুঃখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর আপ্যায়নের ব্যবস্থা হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য স্বার্থত্যাগ, আত্মত্যাগ ও সম্পদত্যাগই হলো কোরবানি। 

 

ঈদুল আজহা আত্মত্যাগের প্রেরণায় উজ্জীবিত এক অনন্য আনন্দ উৎসব। যে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণ মূর্ত হয় মানুষের জীবনে, তার জন্য চরম ত্যাগ স্বীকারের এক প্রতীকী আচার এই কোরবানি। ঈদুল আজহার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিজের অহমিকা ও উচ্চাভিলাষ উৎসর্গ করা। পশু কোরবানির ভেতর দিয়ে মানুষের ভেতরে থাকা পশুশক্তি, কাম-ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি রিপুকেই ত্যাগ করতে হয়। তাই শুধু পশু নয়, প্রয়োজন পশুত্বের কোরবানি। কোরবানিদাতা শুধু পশুর গলায় ছুরি চালান না, তিনি তাঁর সব কুপ্রবৃত্তির ওপরও ছুরি চালিয়ে তাকে নির্মূল করেন। এটাই হলো কোরবানির মূল শিক্ষা। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে এ অনুভূতি অবশ্যই প্রয়োজন।

 

কোরবানির অর্থ কেবল পশু জবেহ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এ কোরবানি কারো জন্য নিজ প্রাণের কোরবানিও হতে পারে আবার কারো নিজ পশুত্বের কোরবানিও হতে পারে। আমরা যদি মনের পশুকে কোরবানি করতে পারি তাহলেই আমরা আল্লাহ তাআলার প্রিয়দের অন্তর্ভুক্ত হতে পারব। কোরবানির ঈদ পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবী হজরত ইব্রাহিম ( আঃ) ও হজরত ( আঃ) এর অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করে। আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর পশু কোরবানি করে থাকে। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘অতএব আপনি আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।’ (সুরা কাউসার, আয়াত ২) কোরবানি একটি প্রতীকি ব্যাপার। এখানে পশু কোরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জানমাল থেকে শুরু করে সবকিছুই কোরবানি করতে প্রস্তুত।

 

হজরত ইব্রাহিম ( আঃ) এবং প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল ( আঃ) এবং মা হাজেরার আল্লাহর প্রতি গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশগুলো আল্লাহ তাআলা হজ্জের অংশ হিসেবে গণ্য করেছেন। আল্লাহ তাআলা হজরত ইব্রাহিম ( আঃ) কে স্বপ্নে দেখালেন, তিনি তার পুত্রকে জবাহ করছেন (সুরা সাফ) অতএব আল্লাহ মানবজাতিকে শিক্ষা দিলেন, মানুষ জবাহ করার জিনিস নয়, জবাহ যদি করতে হয় তাহলে পশু জবাহ করো।

 

আমাদের পুণ্যকর্মগুলোর মূল উদ্দেশ্য যদি হয়ে থাকে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি তাহলে তিনি হয়তো আমাদের আমল গ্রহণ করবেন। এর মাধ্যমেই আল্লাহপাক বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হোন। আল্লাহপ্রেমিক বান্দারা ঘরে বসেই তার বান্দাদের কষ্ট দূর করার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। যারা তার বান্দার কষ্টের সময় সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে আল্লাহপাক তাদেরকে তার বন্ধু বানিয়ে নেন। তাই কোরবানীর ফজিলত লিখে সমাপ্তি করা অসম্ভব। তাই সমস্ত মুসলিম জাতির প্রতি আবেদন যদি কুরবানী করার ক্ষমতা থাকে তো নিশ্চয়ই নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতকে অনুসরণ করে কোরবানী করুন। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের যারা সামর্থ্যবান রয়েছেন তাদের সকলকে সাধ্য অনুযায়ী কোরবানি করার তৌফিক দান করুক, আমিন।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর দেখুন
© All rights reserved © 2025 notuntara
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT